কল্পনাগুলো কি সত্যি ?

চলুন আজ একটু কল্পনার স্রোতে নিমজ্জিত হই। আকাশ কুসুম কল্পনার সত্যতা নাই বা যাচাই করলাম। প্রযুক্তিবিদ্যা এখনো এই কল্পনার সত্যতা যাচাই করার মতো পারদর্শী হয়ে ওঠে নি। প্রযুক্তিবিদ্যার এই সত্যতা যাচাই এর আগে আরো অনেক বড় কাজ আছে যা হলো ক্যান্সার এর মতো ভয়াবহ ব্যাধিকে ৫ টাকার ট্যাবলেট খেয়ে সারানো। 

যাই হোক এবার আসুন কল্পনার সমুদ্রে ডুব দিই। এই ছোট্ট পৃথিবী টাতে কোটি কোটি মানুষের বসবাস। ভগবান যেন সময় গুলোকে বেঁধে রেখেছেন - সূর্যের উপস্থিতিতে কর্ম করে খাওয়ার সময় আর বাকি সময়টা চন্দ্রদেবের সম্মুখে বিশ্রামের সময়।  কি দারুন নিয়মগুলো , তাই না ?

আচ্ছা ,ভাবুন তো এমন ও তো হতে পারে কোটি কোটি সূর্য প্রত্যহ কোম্পনি তে যায় কাজ করতে আর রাতের কাজগুলো কোটি কোটি চাঁদের অধীনে হয়ে ওঠে। আপনি ,আমি এই প্রযুক্তিবিদ্যা কে নিয়ে কত টুকুই জানি ?তাহলে ভাবুন -এক বিশাল মহাশূণ্য, যেখানে কোটি কোটি সূর্য, চাঁদ,আর নক্ষত্রের বসবাস। আর আমরা তুচ্ছ মানুষেরা এবং অসংখ্য প্রাণীরা  তাদেরই অধীন। এই সূর্য ,চাঁদ আর নক্ষত্রদের কাজ ই হলো সৃষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখা ,সৃষ্টি তে নতুন কিছু নিয়ে আসা। সৃষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ওরা অনবরত ঘুরে চলেছে। আর এই ঘোরার জন্যই ওরা নিজেদেরকে ঠিক রাখতে পারে। ওদের মধ্যেও হয়তো প্রতিযোগিতা চলে। কোন মহাকাশে সৃষ্টি উন্নত ,সেই মহাকাশেরেই সূর্যদেব ফাইনাল পুরস্কার টা হয়তো পেয়ে থাকে। তাহলে কি ওদের ও প্রাণ আছে -এই প্রশ্ন টা এখন আপনার মনে ,তাই না ?
আপনাকে কে বলেছে ওরা প্রাণহীন ? আচ্ছা প্রাণ বলতে আপনি কি বোঝেন ? যার গতি আছে ,যার কিছু অনুভূতি আছে ,যার পরিবর্তন আছে , আর যার জন্ম-মৃত্যু আছে ,তাই তো ? আপনি কি করে জানলেন যে এই সূর্য,চন্দ্র আর নক্ষত্রদের এর কোনোটাই নেই ? ওদের ও তো গতি আছে ,জন্ম-মৃত্যুও আছে ,বৃদ্ধিও আছে।  আপনি এবার ভাবছেন -আজব কথা বলছেন তো ,ওদের আবার এইসব কি করে আছে ?
তাহলে চলুন এবার একটু গভীরে এ ভাবা যাক। আমাদের ৩৬৫ দিনে বছর হয়  কিন্তু তার মানে তো এই নয় যে ওদের ও ৩৬৫ দিনেই বছর হতে হবে।  এমন ও তো হতে পারে ওদের কোটি কোটি যুগ এ বছর হয়। আমরা যেটা কে বছর বলি ওরা সেটাকে যুগ বলে। ওদের আয়ু হয়তো কোটি কোটি যুগ।হয়তো ওদের ও পরিবার আছে। ওদের ও কাজ করে যেতে হয়। কোটি কোটি যুগ এ ওদের কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। আর পরিবর্তন ই কি প্রাণ থাকার জন্য যথেষ্ট নয় ?আরো অনেক হাজার হাজার কোটি কোটি যুগ পরে এই সূর্যের ,চন্দ্রের মৃত্যু ও হতে পারে ,তারপর আবার কোনো নতুন সূর্য,নতুন চন্দ্রের জন্ম হবে। তাহলে তো জন্ম মৃত্যুও আছে।  আর কি থাকলে আপনারা এই সৈর জগৎ এর এই সদস্যগুলোকে প্রাণী বলে আখ্যা দেবেন ,বলুন তো ?

আচ্ছা আপনাদের মধ্যে অনেকে হয়তো মেনে নিলেন এই সৈর জগৎ এর সদস্যগুলোর প্রাণ আছে ,তাহলে আরো একটা নতুন চিন্তার উদয় হচ্ছে না আপনাদের মাথায় ?তাহলে ভগবান কে ? উনি কি এই কোটি কোটি সৈর জগৎ এর ও ওপরে বিরাজমান ?তাহলে কি এই সৈর জগৎ এর মালিক উনি ?আর আমাদের -এই পৃথিবীতে বিরাজমান সব প্রাণীদের মালিক কি এই সৈর জগৎ ? হয়তো এমনটাই। প্রযুক্তিবিদ্যা যতদিন না এইগুলো এর পেছনে যথেষ্ট প্রমাণ নিয়ে আসবে ততদিন অবধি এইগুলো শুধুই অলীক কল্পনা। 

সৈর জগৎ তো কোম্পানি টার মালিক ,কিন্তু আমরা তো কর্মচারী। আমরা যদি সৃষ্টি এর মধ্যে নতুন ভালো কিছু আনতে পারি ,হতেও তো পারে আমরা আরো উন্নত পর্যায়ে উঠতে পারি যেমন কোম্পানি তে কেও ভালো কাজ করলে তার প্রমোশন হয় ,ঠিক সেইরকম। তাহলে ভগবানের পুজো না করে এই সৈর জগৎ এর পুজো করাই কি উচিত নয় ? ধন-সম্পত্তি বাড়ানোর দিকে নজর না দিয়ে সৃষ্টির ভারসাম্য ঠিক রাখার দিকে গুরুত্ব দেওয়াটাই কি উচিত নয় ?

দেখুন কল্পনাগুলো যে একদম অলীক তা কিন্তু আপনিও জোর গলায় বলতে পারবেন না। যেমন কল্পনাগুলো যে সত্যি তার পেছনে কোনো প্রমান নেই ঠিক তেমনি কল্পনাগুলো যে ভুল তার ও তো প্রমান নেই। তাহলে এত্তো তক্কো কেন ? এতো তক্কের মধ্যে না গিয়ে কল্পনা ভেবেই অন্ততপক্ষে সৃষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখার কাজে যদি নিজেদের নিয়োগ করি ,এতে খারাপ তো কিছু হবে না। তাহলে চলুন আমরা সক্কলে মিলে সৃষ্টিকে সুন্দর করার এক অদম্য প্রয়াস চালিয়ে যায়। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মাতৃভাষা

কালবৈশাখীর আগমনে

মাতৃত্ববোধ