ওরা

picture of a begger begging from a roadside car এর ছবির ফলাফল

ট্রাফিক সিগন্যাল এ বাস মাঝ রাস্তায় থেমে -
সকাল ৯টাই অফিস যাওয়ার তাড়া ;ব্যস্ততা সবারই জীবনে ,
শুধু ওরা বাদে ,বাস অটো খুব দামি গাড়ির ভিড়
এই অবস্থায় রাস্তা ক্রস হাওয়া মুশকিল যে কারো -
শুধু ওরা বাদে। তুমি বাবু ,তোমার ৪ চাকার গাড়ীতে বসে -
তোমার স্ত্রীর পাশে ,অফিস যাওয়ার কারণে।
তোমার সিগারেট তোমার মুখে ,ড্রাইভার চালায় গাড়ী।
তোমরা পেছনের সিট এ। খুব জোরে চলছে
৯৮.৩ FM  রেডিও মির্চি , চলছে তোমাদের প্রেম।
পাশেই দুটো বাচ্চা বলে ওঠে -বাবু একটা টাকা দাও না।


তবু তোমার সিগারেট এর ধোঁয়া অবিশ্রান্ত তোমার মুখ থেকে -
বেরিয়েই চলেছে ,তুমি পরোয়া করলে না।
একবার ও চোখ দুটো ফেললে না -ওই রাস্তার বাচ্চা দুটোর ওপর
কেনই ফেলবে ? তোমার নিজের ছেলে মেয়ে তো ভালোই আছে ,
ওরা অসহায় ,ওদের নেই কোনো ঠিকানা ,নেই কোনো ঘর ,
নেই পা এ জুতো -জন্ম দিয়েছে যে মা ,তাকেই ওরা চেনে না ,
খুব অপরিষ্কার ওদের দেহ ,পরনে নেই কোনো আবরণ ,
বাচ্চা ওরা ,পৃথিবীটা না জানি কেমন লাগে ওদের কাছে -
ওদের ও ইচ্ছে করে -বাবা মা এর ভালোবাসা পেতে -
ইচ্ছে করে - বাবুদের ছেলেদের মতো স্কুল এ যেতে।
এইভাবে ভিক্ষে করতে কার ভালো লাগে ?
মানুষগুলোর খুব অহংকার, ভিক্ষে চাইলেও দেয় না।


আমি তখন বাস এ , আমিও বাবুদের মতোই অফিস যাওয়ার কারণে
নীরব দর্শক আমি ,আমার কান শুনে ওই বাচ্ছাদের কান্না,
আমার চোখ নীরবে কাঁদে আমার ভাই বোনেদের দুর্দশাতে -
আমার মন ভাবে আমার পৃথিবী ওদের চোখে কেমন লাগে ?
আমিও বাবুদের মতোই সুপোশাকে সুসজ্জিত,রামধনু স্টাইল এ ,
আমার মুখ কিছুতেই কথা বলে ডাকে না -ওরে আয় আমার কাছে।
আমার হাত কিছুতেই আমার পার্স এর ভেতরে যায় না।
কখনো পার্স এর ভেতরে হাত গেলেও ,খুচরো হাতের নাগালে আসে না।
সবচে বারো লজ্জা -আমিও বাবুদের মতোই অহংকারী।
আমিও ওদের ভালোবেসে দুটো টাকা দিতে সংকোচ বোধ করি।
তবু ভাবি ওদের কথা - ভাবি ওরা কি ভাবে ?
আমার সুন্দর পৃথিবী ওদের চোখে কেমন লাগে ?





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মাতৃভাষা

কালবৈশাখীর আগমনে

মাতৃত্ববোধ