পোস্টগুলি

Writing

প্রকৃতিই আমার ঘর

ছবি
বলতে পারিস ঘরের আমার কি দরকার ? দুই পাহাড় হবে ঘরের দুই দেওয়াল , আর ওপরের টুকরো টুকরো মেঘ দিয়ে বানাবো ঘরের ছাদ। কিন্তু মেঘ, বৃষ্টি নিয়ে আসিস অঝোরে ঠিক আমার চানের সময়ে , শীতের রাত্রে কাঁপবো যখন ঠনঠন করে, মেঘ তুই আমায় কম্বলের মতো করে দিস ঢাকিয়ে। গরমের তো চিন্তায় আর রইলো না - দুই পাহাড়- সূর্যালোক কে ঢুকতে দিলে -তবে না ? বেঁচে তো গেলাম গরম আর শীতের প্রকোপ থেকে প্রকৃতির কোলে মাথা গুঁজে। কিন্তু মেঘ অবাধ্য হোস না যেন - চানের সময় ছাড়া রাতদুপুরে আবার বৃষ্টি আনিস না যেন। অবাধ্য যদি হয়েই যাস, বড্ডো মুশকিল এ যদি আমায় ফেলেই দিস, কেমনে রে বাঁচাবো নিজেকে; কেমন করে রে ঠাঁই নেবো অন্য কোথাও তোকে ছেড়ে ! ইট,বালি ,সিমেন্ট এর ঘরে তোকে যে পাই না কাছে এমনটা করে।

করোনা

  উফ আর পারা যাচ্ছে না। এতো কাজের মধ্যে এই ভিডিও, ওই ভিডিও, এই খবর ,ওই খবর। সকাল বিকাল মোবাইল এ শুধু  করোনার খবরই আসতে থাকে। কেও বলে -সবসময় সাবান দিয়ে হাত ধুতে,আবার কেও বলে -আমাদের হাতের মধ্যে কিছু ভালো ব্যক্টেরিয়া থাকে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। বার বার হাত ধুলে বা স্যনিটাইজার লাগালে, ওই ব্যক্টেরিয়া গুলো মরে যায়। এর ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। মহা মুশকিল তো! কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল? কোনটা শোনা উচিৎ? দুদিকেই সমস্যা। এই অবধি তাও ঠিক ছিল। কিন্তু আজকের মেসেজ টা পড়ার পর আর না লিখে থাকা গেল না। ভদ্র মহিলার বাড়ীতে কারো করোনা নেই। ভদ্রমহিলা বাড়ীর বাইরে যান না, বাইরের খাবারও খান না।তবু ভদ্রমহিলার করোনা এল কি করে? এই নিয়ে খতিয়ে দেখা হয়েছে। মেসেজ এ বলা হয়েছে যে - ভদ্রমহিলার করোনা ফ্রিজে রাখা খাবার বা সব্জি থেকে এসেছে। আর সেইজন্য কিছু টিপস ও দেওয়া হয়েছে আমাদের জন্য। টিপসগুলো কি কি দেখে নিই।  ফ্রীজ যখন খুলব, মাস্ক পরে খোলা উচিৎ। এতদিন জানতাম- ঘরে এলেই মাস্ক খুলে ফেলা উচিৎ। বেশিক্ষণ মাস্ক পরলে আমাদের ফুস্ফুসে সমস্যা হতে পারে। ফ্রিজে খাবার বা সব্জি না রাখাই ভাল-সেই কথাও বলা হয়েছে

করোনার জন্মবৃত্তান্ত

ছবি
এক জঙ্গলে এক মহান বাঘ বাস করতো। এই বাঘ টি সকলের থেকে আলাদা ছিল। মহাদেব এর পরম ভক্ত এই বাঘ টি। একদিন এই বাঘ টি মহাদেব কে একটি প্রশ্ন করলেন -"আচ্ছা দেব ,আপনি ই তো বলেন যে আপনি সকলকে ভালোবাসেন।  যদি আপনি সকলকে সমান ভালোবাসেন তাহলে সবার জন্য এক ই রকম নিয়ম নয় কেন ?"  মহাদেব উত্তরে বললেন -"তোমার তো চারটে  সন্তান আছে। আর তুমিও তাদের সকলকেই সমান ভালোবাসো ,তাহলে বড় সন্তান কে সবচে বড় দায়িত্ব দাও, আর ছোট কে তোমার কাছে আরাম করতে শেখাও কেন ?তুমিও তো নিয়ম সবার জন্য আলাদা ই করেছো, তাই না ?নাকি তুমি ছোট কে বেশি ভালোবাসো?"  বাঘটি বললো -"না দেব ,আমি মা হয়ে কি করে এই অন্যায়টা করতে পারি ?"  মহাদেব বললেন -" আমিও তো সকলের পিতা হয়ে কি করে ভালোবাসায় ভেদাভেদ করতে পারি ? কিন্তু হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন তোমার মনে ?"  বাঘটি উত্তরে বললো -"আপনার বিশাল পৃথিবীতে আমাদের বসবাসের জায়গা সীমিত কিন্তু মানুষদের বসবাসের কোনো গন্ডি আপনি তৈরী ই করেন নি। জলে,স্থলে, আসমানে,জঙ্গলে ,পুকুর-নদী -সমুদ্রের আশেপাশে ,পাহাড়ে -পর্বতে ,সমতলে-মালভূমিতে -সর্বত্রই তাদের অবাধ রাজত্ব। এই ভেদাভে

নারী

লিখবো আমি তাদের কথা - যাদের কথা কেও কখনো বলে নি , যাদের কথা সীমাবদ্ধ রয়েছে , ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে , যাদের ঝগড়াঝাঁটি খুঁনসুটি , কারো কখনো নজর কাড়ে নি। সারা দেশের আওয়াজ ভেসে ওঠে সংবাদপত্রের মধ্যে হেডলাইন হয়ে , দেশের সমস্যায় যারা আজ চিন্তিত , তাদের পরিবার,ঘরবাড়ির খুঁটিনাটি খবর কেও কখনো রাখে নি , ঘরের মধ্যে বাসা বাঁধা শান্ত কলহ ঢেউ তুলে দেওয়াল ভেঙে যদি বা কখনো বেরিয়ে আসে , সংবাদপত্রও হয়ে পড়ে চিন্তিত ! প্রতিটা ঘর এর ভেতরে আজ ও নারীরা লুকিয়ে কাঁদে , ঘরের বাহিরে হাসে গর্বে বলে -আমি নারী ,আমি পারি। বাহিরে সে সত্যি ই রানী , ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে বা রাত্রির গভীর অন্ধকারে সে বরাবরই পুরুষের দাসী। দিনের আলোয় পুরুষের ত্যাগ এর ছড়াছড়ি , নিশীথে ঘরমধ্যে তাদেরই বাড়াবাড়ি ! বাহিরে সম্মান পরনারীকে , ভেতরে ঘর মধ্যে ধিক্কার নিজনারীকে , এই কয়েক ফোঁটা ঝগড়া,অত্যাচারের কথা কোন সংবাদপত্রে পায় জায়গা ? যেদিন প্রতিটা ঘরে নারী হবে আদর্শ রানী , যেদিন প্রতিটা পুরুষ ঘরের নারীদের প্রতি ত্যাগের জন্য বিচারের জন্য থাকবে প্রস্তুত , যেদিন প্রতিটি শাশুড়ী তার বৌমা কে গৃহ শক্তি বলে আখ্যা

কর্ম

পথের আবার কি ভালো ,কীই বা মন্দ ! পথচারী যখন  রাজপুত্র , পথ হয়ে ওঠে পবিত্র। নামে আবার কি যায় আসে, নামধারণকারী যদি পাগলাগারদে ? নাম তো তখনই ভালো , নামধারণকারীর চারিদিক যখন আলো। কর্মের আবার কি ভালো কি মন্দ  কর্মকারী কে দিয়েই মিটে এই দন্ড। কর্মকারী যখন ভয়ে ভয়ে চরে বেড়ায়, সেই কর্মই খারাপ নাম চিহ্নিত হয়। কর্মকারী যদি সুখের মুকুট পরে, সেই কর্মই জগতে শোভা বর্ধন করে। ব্যক্তির কর্মই ব্যক্তির নামের মূল্য নির্ধারণ করে , ব্যক্তির কর্মই পথের গুরুত্ব ঠিক করে , ব্যক্তির নাম এর গুরুত্ত ব্যক্তির কর্মের ওপর নির্ভর করে , কখনো বাড়ে আবার কখনো কমে। কর্মই ব্যক্তির ধর্ম কর্মই ব্যক্তির আসল পরিচয়।

এতো ভীড় তবু একা

চারিদিকে শুধু ভীড় আর ভীড়, হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুকেও মানুষের নীড়। অনলাইন অফলাইন সবজায়গায় ভীড়। তবুও সব্বাই একা ,ভীষণ একা, মোবাইল ছাড়া জীবনটাই ফাঁকা। মোবাইলের জন্যই তো আজ মানুষ একা। এতো ভীড় ,তবু এক শূন্যতা গ্রাস করে সর্বক্ষণ পরিশ্রান্ত হয় সর্বজন লুপ্ত হয় সুখের পূর্ণতা।

মাতৃভাষা

মাতৃভাষা – তোকে ছাড়া চলে না ছোট্টবেলা, বুঝেও যৌবনে সকলেই করে তোকে অবহেলা। ছোট্টবেলায় তোকে নিয়ে লাফালাফি, স্কুলে ঢুকেই ইংরেজী নিয়ে মাতামাতি। চাকরি নিয়ে ভাবনা,তোকে ভুলে রাতারাতি, দু তিনটে ভাষা নিয়ে শুধু টানাটানি। তোর অস্তিত্ব ওই চার দেয়ালের মধ্যে, কিংবা পাড়াপড়শির কূট কাঁচালিতে। তোর অস্তিত্ব বাথরুমে গান গাওয়াতে , কিংবা শাড়ী বা মিষ্টির দোকানে। মানুষ স্বপ্ন দেখে মাতৃভাষাতে, স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় বিদেশী ভাষার প্রয়োগে। মাতৃভাষা না, বিদেশি ভাষা জানলে চাকরী পাকা, আর না জানলে জীবনটাই ফাঁকা। তবুও মাতৃভাষা ছাড়া শ্বাস বন্ধ, মাতৃভাষা ছাড়া মনটাই অন্ধ, সারাদিন কাজের মাঝে বিদেশী ভাষার প্রয়োগে, সন্ধ্যে বেলাতে বাড়ি এসে মাতৃভাষাতে কথা বলে, যখন সব জ্বালা এক নিমেষে যায় ঘুচে, মন বলে – মাতৃভাষা থাকিস এই ভাবে আমার কাছে।

স্বপ্নে বাঁধানো ঘর

জানো ?স্বপ্নে আমি কত্তো গেছি , পাহাড়ে-জঙ্গলে, নদীর স্রোতে গা ভাসিয়েছি। আমার সেই দুই পাহাড় ,আর মধ্যখানে সেই নদী, আমার সেই স্বপ্নে বাঁধানো ঘর আজ কোথায় কি জানি ? আজো ইচ্ছে করে, সব কিছু ছেড়ে - যাই চলে ডানা মেলে, আমার ওই স্বপ্নে বাঁধানো ঘরে।